সাত বছরেও পূর্ণাঙ্গ কমিটি হয়নি হতাশা,জেলা কমিটির দ্বন্দ্বের প্রভাব পড়েছে সদরের নেতা–কর্মীদের মধ্যে। এ কারণে দীর্ঘদিনেও পূর্ণাঙ্গ -কমিটি গঠন করা সম্ভব হয়নি।কুড়িগ্রাম- সদর উপজেলা বিএনপির সর্বশেষ সম্মেলন হয়েছে ২০১৬ সালে। এরপর সাত বছর পেরিয়ে গেলেও পূর্ণাঙ্গ -কমিটি গঠন করা হয়নি। এতে তৃণমূল নেতা-কর্মীদের মধ্যে ক্ষোভ ও হতাশা বিরাজ করছে। দলীয় কার্যক্রমে দেখা দিয়েছে স্থবিরতা।
সাত বছরেও পূর্ণাঙ্গ কমিটি হয়নি হতাশা
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, আবদুল আজিজকে সভাপতি ও মো. মাহবুবার রহমানকে সাধারণ সম্পাদক করে সাত বছর আগে পাঁচ সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়। ওই সময়ই বিএনপির শীর্ষপর্যায়ের নেতারা এই কমিটিকে দ্রুত পূর্ণাঙ্গ -কমিটি গঠনের নির্দেশ দেন। কিন্তু তিন বছর মেয়াদী ওই কমিটির মেয়াদ শেষ হলেও উপজেলা বিএনপির পূর্ণাঙ্গ -কমিটি গঠন করতে পারেনি।
উপজেলা বিএনপির নেতারা বলছেন, সদর উপজেলা বিএনপির সভাপতি আবদুল আজিজ একজন ব্যবসায়ী এবং প্রবীণ ব্যক্তি হওয়ায় তিনি মাঠপর্যায়ে সক্রিয় নন। অন্যদিকে সাধারণ সম্পাদক মাহবুবার রহমান একটি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ছিলেন। তাই উপজেলা কমিটিতে সময় দিতে পারেননি। তবে তৃণমূল নেতাদের কেউ কেউ বলছেন, কুড়িগ্রাম- সদর উপজেলা বিএনপি দুটি ভাগে বিভক্ত। কমিটির সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক এবং সাংগঠনিক
সম্পাদক আহসান হাবিব জেলা কমিটির সভাপতির অনুসারী। অন্যদিকে সদর উপজেলা কমিটির জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি আইয়ুব আলী ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আকবর আলী জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদকের অনুসারী। ফলে এই কমিটির পরিচিতি সভা হয়নি।উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক জহুরুল আলম প্রথম আলোকে বলেন, ‘জেলা বিএনপির সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের দ্বন্দ্ব উপজেলা বিএনপিসহ তৃণমূলে ছড়িয়ে পড়েছে।
সর্বশেষ সম্মেলনের আগে আমি উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ছিলাম। সদর উপজেলার আটটি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভার তৃণমূল নেতা–কর্মীরা আমাকে ভালবাসেন। কিন্তু উপজেলা সম্মেলনে আমাকে কারচুপি করে হারিয়ে দিয়ে বেলগাছা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মাহবুবার রহমানকে সাধারণ সম্পাদক করা হয়। কিন্তু তিনি নিজ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান হিসেবে যতটা সফল, উপজেলার অন্যান্য ইউনিয়ন কমিটির সঙ্গে সমন্বয়ে ততটাই
ব্যর্থ। ফলে সদর উপজেলা কমিটি গঠনের সাত বছর পরেও ওই কমিটির কোনো পরিচিত সভা কিংবা মিটিং হয়নি। এভাবে চলতে থাকলে তৃণমূলপর্যায়ে বিএনপি তাদের সমর্থন হারাবে।’এ বিষয়ে উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মো. মাহবুবার রহমান বলেন, পাঁচ সদস্যবিশিষ্ট কমিটি গঠনের কিছুদিন পর উপজেলার বিভিন্ন স্তরের নেতা–কর্মীদের নিয়ে উপজেলা কমিটি গঠন করা হয়েছে এবং জেলা কমিটির অনুমোদন নেওয়া আছে। কত সদস্যবিশিষ্ট
কমিটি কত সালে গঠন করা হয়েছে, এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি কমিটির পাঁচজনের নাম বলার পর বলেন, ‘এই মুহূর্তে বাকিদের নাম মনে পড়ছে না। আমি ঢাকা থেকে এসে বাকিদের নামের তালিকা দিতে পারব।’এ বিষয়ে উপজেলা বিএনপির সভাপতি আবদুল আজিজ বলেন, জেলা বিএনপির নেতাদের কোন্দলের কারণে সদর উপজেলার ইউনিয়ন পর্যায়ের নেতা-কর্মীরা দুভাগে বিভক্ত হয়ে গেছেন। এ জন্য উপজেলা কমিটি গঠিনের সাত বছরেও পূর্ণাঙ্গ
কমিটি গঠন করা সম্ভব হয়নি। সম্প্রতি জেলা বিএনপির দপ্তর সম্পাদকের কাছে পূর্ণাঙ্গ -কমিটি গঠনের জন্য কিছু কাগজপত্র জমা দেওয়া হয়েছে। তবে সেই কমিটি কত সদস্যবিশিষ্ট বা কমিটি গঠন হয়েছে কি না, সে সম্পর্কে তিনি কোন উত্তর দিতে পারেননি।এ বিষয়ে জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সাইফুর রহমান রানা জানান, ‘জেলা কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের মধ্যে দ্বন্দ্ব থাকতেই পারে। কিন্তু জেলা কমিটি তো তাদের পূর্ণাঙ্গ কমিটি
আটক রাখেনি। নিজেদের ব্যর্থতার দায় অন্যের ওপর চাপিয়ে দিলে তো হবে না। ২০১৬ সালে কমিটি গঠন করে দেওয়া হয়। সাত বছরেও পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করতে পারেনি। আমি কিছুদিন আগেও মহাসচিবের কাছে সদর উপজেলাসহ কয়েকটি নতুন কমিটি গঠনের প্রস্তাব দিয়েছিলাম। এসব উপজেলায় পূর্ণাঙ্গ কমিটি নেই। মহাসচিবের অনুমতি পেলেই সেখানে নতুন করে কমিটি গঠন করা হবে।
আরও পড়ুন:
