Site icon কুড়িগ্রাম জিলাইভ | truth alone triumphs

ঘন কুয়াশার চাদরে ঢাকা পড়েছে কুড়িগ্রামের জনপদ, ভোগান্তি

বাংলা বর্ষপঞ্জির প্রথম সপ্তাহে ঘন কুয়াশার চাদরে ঢাকা পড়েছে উত্তরের জেলা কুড়িগ্রামের জনপদ। কনকনে হিমেল হাওয়ায় জেঁকে বসেছে শীত। এতে ঠান্ডাজনিত নানা রোগে ভুগছেন চরাঞ্চলের শিশু ও বয়স্করা।

 

ঘন কুয়াশার চাদরে ঢাকা পড়েছে কুড়িগ্রামের জনপদ, ভোগান্তি

সরেজমিন দেখা গেছে, মধ্যরাত থেকে সকাল পর্যন্ত বৃষ্টির মতো ঝরছে কুয়াশা। বেলা বাড়লেও দেখা মিলছে না সূর্যের। ঘন কুয়াশার কারণে হেডলাইট জ্বালিয়ে সড়কপথে যান চলাচল করছে। এদিকে সোমবার সকাল সাড়ে ৯টা পর্যন্ত জেলার চিলমারী নৌ-বন্দর ও সদরের যাত্রাপুর নৌ-ঘাটের নৌ-যানগুলোগুলো বন্ধ ঘোষণা করে কর্তৃপক্ষ। জেলার আন্তঃনগর ট্রেনও ঘন কুয়াশার কারণে আড়াইঘন্টা বিলম্বে কুড়িগ্রামে পৌঁছেছে।

লোকজন খড়কুটো জ্বালিয়ে চেষ্টা করছেন শীত নিবারণের। আজ সকালেও কুড়িগ্রামে দেখা মেলেনি সূর্যের। গতকাল রোববার সামান্য সময়ের জন্য সূর্যের দেখা মিললেও বিকাল ৩টার পর উত্তাপ কমে শীতের মাত্রা আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।

এ অবস্থায় নিম্নআয়ের মানুষ ঘনকুয়াশার কারণে দেরিতে কাজে বের হলেও কাঙ্ক্ষিত কাজ পাচ্ছেন না। নৌ-যানগুলো দেরিতে ছাড়ার কারণে চরের বসবাসরত দিনমজুরেরা পড়ছেন আরও বিপাকে। শীত নিবারণের জন্য জেলা প্রশাসন থেকে কম্বল বিতরণ করা হলেও তা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল। কম্বল রাতের বেলায় শীত নিবারণ করলেও দিনের বেলায় গরম পোশাকের অভাবে পুরনো কাপড় গায়ে জড়িয়েই শীত পাড়ি দিচ্ছেন খেটে খাওয়া এসব শ্রমজীবীরা।

জেলার রাজারহাট কৃষি আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগার জানায়, লঘুচাপের কারণে আকাশে মেঘ থাকায় কুয়াশার উপস্থিতি বাড়ছে। সেই সঙ্গে ধেয়ে আসা শীতল বাতাসের কারণে শীতের তীব্রতা বেড়েছে। সোমবার সকাল ৬টায় জেলায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১১ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস যা গতকাল রোববার ছিল ১২ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গত এক সপ্তাহ ধরে জেলার সর্বনিম্ন গড় তাপমাত্রা ১১ থেকে ১৩ ডিগ্রী পর্যন্ত ওঠা-নামা করছে।

গুগোল নিউজে আমাদের ফলো করুন

 

সদরের মোগলবাসা নৌ-ঘাটের নৌকা চালক রাশেদ আলী বলেন, আজ সকালে খুব কুয়াশা ছিল ১০টার পরে নৌকা খুব আস্তে চালাতে হয়েছে। গতকাল বিকেলে আমার নৌকা চরে আটকা পড়ছিল কুয়াশার জন্যে, কিছুই দেখা যায় না।

জেলা সদরের পাঁচগাছির কৃষক ওমর আলী বলেন, সকালে জমিত কাজে করা যায় না। কুয়াশা ঝড়ির (বৃষ্টির) নাকান (মতো) হামার গাওত (শরীরে) পানি পড়ে। হাত পা ঠান্ডাতে অসার (অবশ) হয়া গেইছে।

নাগেশ্বরীর বামনডাঙ্গা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান রনি বলেন, ইউনিয়ন প্রতি ১২-১৩টা করি সরকারি কম্বল বরাদ্দ পাইছি, এটা দিয়ে কি হয় বলেন। আমার এলাকা দুধকুমার নদের তীরে, এখানকার মানুষ ঠান্ডাতে কষ্ট পাচ্ছে।

কুড়িগ্রাম কৃষি আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সুবল চন্দ্র সরকার জানান, আগামী সপ্তাহে জেলার ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া লঘুচাপ সরে গেলে তাপমাত্রা আরও নিম্নগামী হবে এবং একটি মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে।

জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা আব্দুল হাই সরকার জানান, শীত নিবারণের জন্য সরকারিভাবে বরাদ্দের ২৭ লাখ টাকা ও ১২ হাজার কম্বল বিতরণ করা হয়েছে। নতুন করে বরাদ্দ পাওয়ামাত্র তা বিতরণ করা হবে।

 

আরও পড়ুন:

Exit mobile version