কুড়িগ্রাম জেলার নদ-নদী

আমাদের আজকের আলোচনার বিষয় কুড়িগ্রাম জেলার নদ-নদী।

কুড়িগ্রাম জেলার নদ-নদী:-

কুড়িগ্রামের নদীগুলো ব্রহ্মপুত্র, তিস্তা, ধরলা, গঙ্গাধর, দুধকুমার, ফুলকুমার, বুড়িতিস্তা, নীলকমল, বোয়ালমারী, সোনাভরি, হলহলিয়া, শিয়ালদহ, ধরণী, জালছিড়া, জিঞ্জিরাম ও কালজানি।

ব্রহ্মপুত্র

ব্রহ্মপুত্র নদ (অসমীয়া: লুইত , ব্ৰহ্মপুত্ৰ নৈ , ব্ৰহ্মপুত্ৰ নদ , সংস্কৃত: ब्रह्मपुत्र, IAST: Brahmaputra; তিব্বতি: ཡར་ཀླུངས་གཙང་པོ་, ওয়াইলি: yar klung gtsang po; সরলীকৃত চীনা: 布拉马普特拉河; প্রথাগত চীনা: 布拉馬普特拉河; ফিনিন: Bùlāmǎpǔtèlā Hé) এশিয়া মহাদেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ নদী। সংস্কৃত ভাষায় ব্রহ্মপুত্রের অর্থ “ব্রহ্মার পুত্র”। এজন্য একে “ব্রহ্মপুত্র নদ” বলা হয়। ব্রহ্মপুত্রের পূর্ব নাম ছিল লৌহিত্য।

 

কুড়িগ্রাম জেলার নদ-নদী
উলিপুর মুন্সিবাড়ী – কুড়িগ্রাম জেলা

 

তিস্তা

তিস্তা নদী বাংলাদেশ-ভারতের একটি আন্তঃসীমান্ত নদী। এটি ভারতের সিকিম ও পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য ও বাংলাদেশের মধ্যে দিয়ে প্রবাহিত একটি নদী। তিস্তা সিকিম ও পশ্চিমবঙ্গের জলপাইগুড়ি বিভাগের প্রধান নদী। একে সিকিম ও উত্তরবঙ্গের জীবনরেখাও বলা হয়। সিকিম ও পশ্চিমবঙ্গের উপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ার পর বাংলাদেশে প্রবেশ করে তিস্তা ব্রহ্মপুত্র নদের সঙ্গে মিলিত হয়েছে। বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড বা “পাউবো” কর্তৃক তিস্তা নদীর প্রদত্ত পরিচিতি নম্বর উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের নদী নং ৫২।

ধরলা

ধরলা নদী বাংলাদেশ-ভারতের একটি আন্তঃসীমান্ত নদী। বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড বা “পাউবো” কর্তৃক ধরলা নদীর প্রদত্ত পরিচিতি নম্বর উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের নদী নং ৫৯।

উৎপত্তিস্থল হিমালয়ে জলঢাকা বা শিংগিমারি নামে পরিচিত নদীটি পশ্চিম বঙ্গের জলপাইগুড়ি ও কোচবিহারের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়ে লালমনিরহাট জেলার পাটগ্রাম দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। প্রবেশের পর নদীটি পাটগ্রাম থানার কাছে পুনরায় ভারতে প্রবেশ করে পূর্বদিকে প্রবাহিত হয়েছে এবং অকস্মাৎ বাঁক নিয়ে কুড়িগ্রাম জেলা দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করে। বাংলাদেশ-ভারতের এই আন্তঃসীমান্ত নদীটি জলঢাকা নদীর সাথে মিলিত হয়ে মুলত ধরলা নামেই কুড়িগ্রামের কাছে ব্রহ্মপুত্র নদে মিশেছে।

 

google news
গুগোল নিউজে আমাদের ফলো করুন

 

দুধকুমার

দুধকুমর নদ বাংলাদেশ-ভারতের একটি আন্তঃসীমান্ত নদী। নদীটির দৈর্ঘ্য ১৬ কিলোমিটার, গড় প্রস্থ ২৪ মিটার এবং নদীটির প্রকৃতি সর্পিলাকার। বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড বা “পাউবো” কর্তৃক দুধকুমর নদের প্রদত্ত পরিচিতি নম্বর উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের নদী নং ৫৭। ভারতের পশ্চিমবঙ্গ থেকে আগত রায়ডাক নদী বা সঙ্কোশ নদী পাটেশ্বরীর কাছে দুধকুমর নাম ধারণ করেছে। বাংলাদেশের একেবারে উত্তর সীমানার নদী দুধকুমর।

ফুলকুমার

ফুলকুমার নদী বাংলাদেশ ও ভারতের একটি আন্তঃসীমান্ত নদী। এটি বাংলাদেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের কুড়িগ্রাম জেলার একটি নদী। নদীটির দৈর্ঘ্য ৩৮ কিলোমিটার, গড় প্রস্থ ৫৫ মিটার এবং নদীটির প্রকৃতি সর্পিলাকার। বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড বা “পাউবো” কর্তৃক ফুলকুমার নদীর প্রদত্ত পরিচিতি নম্বর উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের নদী নং ৭৫।

 

কুড়িগ্রাম জেলার নদ-নদী
বেহুলার চর – কুড়িগ্রাম জেলা

 

বুড়িতিস্তা

বুড়িতিস্তা নদী বাংলাদেশ-ভারতের একটি আন্তঃসীমান্ত নদী। এটি ভারতের কোচবিহার জেলা ও বাংলাদেশের নীলফামারী জেলার উপর দিয়ে প্রবাহিত একটি আন্তর্জাতিক নদী। নদীটির দৈর্ঘ্য ৭৬ কিলোমিটার, গড় প্রস্থ ৬৯ মিটার এবং নদীটির প্রকৃতি সর্পিলাকার। বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড বা “পাউবো” কর্তৃক বুড়িতিস্তা নদীর প্রদত্ত পরিচিতি নম্বর উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের নদী নং ৮৬। নদীটি তিস্তা নদীর একটি শাখা নদী এবং একসময় এটিই তিস্তার মূল ধারা ছিল।

কালজানি

কালজানি নদী (বাংলা: কালজানী) তোরশা নদীর একটি উপনদী যা হিমালয়ের পাদদেশে ভুটানে উৎপন্ন হয়ে (26′50 ‘ 24′N 89′26 ‘ 28′E) ভুটান ও ভারতের মধ্য দিয়ে উত্তর থেকে দক্ষিণে প্রবাহিত হয়ে তোরশা নদীর সাথে মিলিত হয়েছে (26ʼ16 ‘ 25′N 89ʼ35 ‘ 01′E)। যা আবার ব্রহ্মপুত্র নদীর সাথে মিলিত হয়ে পদ্মা নদীতে পড়েছে এবং সবশেষে বঙ্গোপসাগরের সাথে মিলিত হয়েছে। কালজানি নদী এবং এর উপনদীগুলি ডুয়ার্সের প্রধান আকর্ষণ । কালজানির প্রধান উপনদীগুলি হল ডিমা নোনাই প্রভৃতি ।

এই নদীর বেশিরভাগ অংশ ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত । ১৯৯৩ সালে আলিপুরদুয়ার, হ্যামিলটানগঞ্জএর মতো শহরগুলি নদীকে শহরে প্রবেশ করতে দেওয়ার সময় বাঁধের রক্ষণাবেক্ষণ প্রাচীর ফুটো হয়ে যায় এবং শত শত মানুষ ও প্রাণী মারা যায়।

আরও পড়ুনঃ

Leave a Comment